WEST BENGAL ASSEMBLY ELECTIONS-2011

RE-ELECT ELECT LEFT FRONT GOVERNMENT OF WEST BENGAL FOR 8TH SUCCESSIVE TERM

Friday, July 12, 2013

বাঁকুড়ায় জেলা পরিষদের্ ১০ আসনে বুথ দখল

Ganashakti

বাঁকুড়ায় জেলা পরিষদের্ ১০ আসনে বুথ দখল

মধুসূদন চ্যাটার্জি

বাঁকুড়া, ১১ই জুলাই — যা আশঙ্কা করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বাস্তবে তাই ঘটলো বাঁকুড়া জেলার একটি বড় অংশে। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিষ্ণুপুর, জয়পুর, কোতুলপুর, পাত্রসায়র এবং ইন্দাস ও তালডাংরার একাংশের বুথগুলি দখল করে ছাপ্পা ভোট দিলো তৃণমূলবাহিনী। এই ৬টি ব্লকে জেলা পরিষদের ১৩টি আসন আছে। ১০টি আসন এলাকাই তৃণমূলীদের কবজায় চলে যায় দুপুর ১২টার মধ্যে। এছাড়া বড়জোড়ার ১০টি, মেজিয়ার ৫টি, বাঁকুড়া ২নং ব্লকের ৫টি, রানীবাঁধের ১টি, খাতড়ার ১টি, শালতোড়ার ৫টি, ওন্দার রতনপুর এলাকা তৃণমূলীদের দখলে চলে যায়। পুলিসবাহিনীর উপস্থিতিতেই চলে ছাপ্পা ভোট। 

এদিন দুপুরের শালতোড়ার ঢেকো অঞ্চ‍‌লের গোস্বামীডিহি বুথে তৃণমূলবাহিনী ঢুকে ব্যালট বাক্স লুট করে পুলিসও সরকারী ভোট কর্মীদের সামনে ভেঙে ব্যালট পেপারগুলি ছিঁড়ে দেয়। বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতীও এই ছিনতাই এর ঘটনা স্বীকার করেছেন। তৃণমূলীদের দখল করে নেওয়া ঐ জেলা পরিষদের আসনগু‍‌লির মধ্যে ১০টিসহ কিছু এলাকায় পুনঃনির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে জেলা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে। এদিন বিকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এখবর জানান জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমিয় পাত্র।

অন্যদিকে, জেলার দক্ষিণাংশে জঙ্গলমহলে অদম্য জেদ, ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে মানুষ ভোটে অংশ নিলেন। রানীবাঁধের আঘঘুটা, খাতড়ার মুড়াগ্রাম ও সারেঙ্গার মাকড়‍‌কোল ছাড়া কোথাও জবরদখল করতে পারেনি তৃণমূলবাহিনী। জঙ্গলমহল রানীবাঁধ, হিড়বাঁধ, সিমলাপাল, রাইপুর, সারেঙ্গা, খাতড়ার বিস্তৃণ অঞ্চলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ ভোট দিয়েছেন। জেলায় ৩৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও দক্ষিণ বাঁকুড়ার হাতেগোনা ৫/১০টা বুথ ছাড়া কোথাও কেন্দ্রীয়বাহিনীকে দেখা যায়নি। 

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে অমিয় পাত্র বলেন, ৮ই জুলাই জেলার সর্বদলীয় সভায় প্রশাসনের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, ৯ তারিখে নির্ধারিত সময়ের পর কেউ প্রচার করতে পারবে না। কিন্তু প্রচারের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ঐদিন তৃণমূলের মোটর সাইকেলবাহিনী জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। ছড়ানো হয় প্রবল হুমকি। ঐ সভাতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, কেন্দ্রীয়বাহিনীকে বিভিন্ন জায়গা টহলের কাজে লাগানো হবে। কিন্তু ৩দিন ধরে কেন্দ্রীয়বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হলো, কোন টহল হলো না। অমিয় পাত্র জানান যে আমরা তখনই বুঝেছি যে বৃহস্পতিবারের ভোটটা সম্পূর্ণ প্রহসনে পরিণত হবে। তবে এই অবস্থার মধ্যেও দক্ষিণ বাঁকুড়ার মানুষ অদম্য জেদ নিয়ে সকাল থেকেই ভোটে নেমেছিলেন। বুধবার রাতেই রানীবাঁধের রাজাকাটা অঞ্চলের আঘঘুটা বুথের বেশিরভাগ ভোটারেরই সচিত্র পরিচয়পত্র কেড়ে নেয় তৃণমূলবাহিনী। পুলিস, জেলাশাসক, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সকলকে রাতেই বিষয়টি জানানো হয় কিন্তু কাজের কাজ কিছু‍ই হয়নি। বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বুথটি সম্পূর্ণ তৃণমূলবাহিনীর দখলে চলে গেছে। তবে এদিন খাতড়া মুসলিমপাড়াতেও মানুষের ভোট দেওয়ার দৃশ্য ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। মহিলা-পুরুষরা দলবেঁধে ভোট দেন। রানীবাঁধ থানার ঝিলিমিলি, বারিকুল, সাতনালাতে, মাজগেড়িয়াসহ পুরো আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় এদিন ভোট একটা উৎসব আকার নেয়। স্বতঃস্ফূর্তভাবে জঙ্গলমহলের রাইপুর, সিমলাপালের মানুষও ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে মেজিয়ার বুকে কয়েকদিন ধরেই প্রবল সন্ত্রাস নামিয়ে আনে। দামোদরেরও পাড় থেকে মাফিয়াবাহিনী এসে আক্রমণ শানায়। এদিন তৃণমূলীদের হাত থেকে রেহাই পাননি ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতির বামফ্রন্টের মহিলা প্রার্থী শান্ত্বনা বাগদী ও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী সীমা বাউড়ি, নির্বচনী এজেন্ট বিশ্বজিৎ বাগদী, পাঁচমুড়ার আধকড়া বুথের বামফ্রন্টের প্রার্থী নীলিমা রুইদাসও। এদিন বড়জোড়ার তাজপুরে বামফ্রন্টের প্রার্থী তরুণ বাউড়ি ও এজেন্ট কল্পনা বাউড়িকে প্রচণ্ড প্রহার করা হয়। বড়জোড়ারই ভৈরবপুরে বামফ্রন্টের প্রার্থী দিলীপ মণ্ডলকে মারধর করে। শান্তিনগরে আরও দুই সি পি আই (এম) কর্মীকে আহত করে চারটি ঘর ভাঙে তৃণমূলীরা। এদিন গঙ্গাজলঘাটিতে সি পি আই (এম) নেতা অসিম পাণ্ডে ও তার ছেলেকেও প্রহার করে তৃণমূলবাহিনী। এদিন তাজপুরের পুরাকেন্দা ও বাগদীপাড়ায় ভোটারদের অবরোধ করে পুরো ছাপ্পা ভোট মারে তৃণমূলবাহিনী। এখানকার এক মহিলা ভোটার ভোট দিতে এলে গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যালটটি কেড়ে নেয় তৃণমূলীরা। ভোট দিতে পারেন না। এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি বাকি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ পদে কোন ভোট দেননি।

- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43570#sthash.Tp06sHFV.dpuf

No comments:

Post a Comment